রোজায় অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকুন: প্রধানমন্ত্রী
আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আরও সতর্ক থাকতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পবিত্র রমজান আসছে। এ মাসে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী লোভ-লালসা সংবরণ করার পরিবর্তে আরও লোভী হয়ে ওঠেন। এটা খুবই দুঃখজনক।’
আজ বুধবার রাজধানীর কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দপ্তরে বাহিনীর ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় সরকারপ্রধান উল্লেখ করেন, একশ্রেণির ব্যবসায়ীরা পবিত্র রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মজুত করতে শুরু করেন, দাম বাড়ান ও নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করেন।
র্যাব সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব অসাধু ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
কিশোর গ্যাং, মাদক, নারীর ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন রোজা সামনে, এই রমজান মাসে; এটা খুব দুর্ভাগ্যের বিষয়, রমজান বলা হয়েছে সংযমের মাস। সংযমতাকে সেখানে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু আমরা দেখি, আমাদের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে, তারা যেন সংযমতার পরিবর্তে আরও লোভী হয়ে পড়ে। যে পণ্যগুলো আমাদের প্রয়োজন, সেগুলো মজুত করে রাখা, সেগুলোর দাম বৃদ্ধি করা, নানা রকমের কারসাজি করে থাকে।
তিনি বলেন, এই অসাধু ব্যবসায়ী, পাশাপাশি যারা চোরাকারবারি, তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। আর ঈদ সামনে এলেই জাল মুদ্রার সরবরাহটা বেড়ে যায়। সেসব বিষয়েও নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। যদিও এর ওপর অভিযান চলছে, অভিযানটা আপনারা অব্যাহত রাখবেন সেটাই আমরা চাই।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই, আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে। আমাদের দেশকে আরও উন্নত করতে হবে। আমাদের যে সমস্ত সম্পদ, সেগুলো সংরক্ষণ করতে হবে। সেগুলো সংরক্ষণ করেই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসে আমরা জিরো টলারেন্স। আমি ধন্যবাদ জানাই র্যাবের সকল সদস্যকে; জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহসী ভূমিকা রেখেছেন। জঙ্গিবাদ দমনে বিশেষ ভূমিকা তারা রেখেছেন।
তিনি বলেন, আমরা বলতে পারি, এই দেশে জঙ্গিবাদের একটি মাত্র ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা আমরা মোকাবিলা করেছিলাম—সেটা হলি আর্টিজানের ঘটনা। তারপর থেকে আমাদের এই দেশে কিন্তু সেই ধরনের বড় ঘটনা ঘটতে পারেনি। কারণ আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এবং প্রতিটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা অত্যন্ত সক্রিয়। বিশেষ করে র্যাবের জঙ্গিবিরোধী ভূমিকার জন্য আমি প্রশংসা করি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অনেক সমস্যা ছিল। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, অবৈধ অস্ত্র, মাদক, বিভিন্ন চরমপন্থা, জলদস্যু, বনদস্যু, একে একে প্রতিটি ক্ষেত্রে কিছু জায়গায় অ্যাকশন নিয়ে, কিছু জায়গায় সমঝোতা দিয়ে, কিছু জায়গায় বুঝিয়ে-সুঝিয়ে—প্রতিটি ক্ষেত্রেই কিন্তু সাফল্য আমরা অর্জন করেছি। আজ সুন্দরবন বনদস্যু মুক্ত হয়েছে। যারা স্যারেন্ডার করেছে, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।
অপরাধীদের পুনর্বাসনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, তাদের পুনর্বাসন করে দিয়ে তাদের জীবন-জীবিকাকে আরও সুন্দর করে দেওয়া, সেই ব্যবস্থাটাই আমরা নিয়েছি যেন আবার তারা বিপথে না যায়। প্রতিনিয়ত তাদের খোঁজ আমরা রেখে যাচ্ছি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও র্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। এ সময় র্যাবের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।