পাকিস্তানের নির্বাচন: সিংহভাগ আসন ‘স্বতন্ত্রদের’ দখলে

টিবিটি ডেস্ক
টিবিটি ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:৩৪ এএম

পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর প্রায় দুইদিন পার হতে চলল কিন্তু এখনও পূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রকাশ করতে পারেনি দেশটির নির্বাচন কমিশন। তবে এ পর্যন্ত যে ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা গেছে, কারারুদ্ধ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পার্লামেন্টের সিংহভাগ আসনে জয় পেয়েছেন।

নির্বাচনের আগে দলীয় প্রধান ইমরানকে একের পর এক দীর্ঘমেয়াদে কারাদণ্ড, দল হিসেবে পিটিআইকে নির্বাচনে অংশ নিতে না দেওয়া ও তাদের দলীয় প্রতীক ‘ব্যাট’ কেড়ে নেওয়ার পর ‘স্বতন্ত্র’ হিসাবে নির্বাচন করতে বাধ্য হয় দলটির প্রার্থীরা।

এভাবে কর্তৃপক্ষ তাদের পেছনে ঠেলে দিলেও পেছন থেকে এসেই তারা নিজেদের জনপ্রিয়তার প্রমাণ দিয়েছে, পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্ররাই ঘোষিত ফলাফলে পার্লামেন্টে সবচেয়ে বেশি আসনে জয় পেয়েছে।

পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডনের দেওয়া সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, পার্লামেন্টের ২৬৬টি আসনের মধ্যে ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯১টি আসনে জয় পেয়েছে। 

আর নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএল-এন) প্রার্থীরা পেয়েছে ৭১ টি আসন। বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রার্থীরা পেয়েছে ৫৩টি, জামিয়তে উলেমা-ই-ইসলাম (জেইউআই-এফ) ২টি ও অন্যান্যরা পেয়েছে ৩৩টি আসন।

একটি আসনে ভোট স্থগিত হয়েছে এবং ১৫টি আসনের ফলাফল ঘোষণা এখনও বাকি আছে।

ঘোষিত ফলে এটা স্পষ্ট হয়েছে, কোনো দলই পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা বা ১৩৩টা আসন পাচ্ছে না। ফলে একটি ‘ঝুলন্ত’ পার্লামেনন্টেই পেতে যাচ্ছে পাকিস্তান।

ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন এটিও দেখার বিষয় পিটিআইয়ের নাম ও সমর্থন নিয়ে পাস করা কতোজন স্বতন্ত্রপ্রার্থী দলটির কারান্তরীণ প্রধান ইমরানের অনুগত থাকে। কারণ আইন অনুযায়ী তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জিতে পার্লামেন্টে আসন পেয়েছে, ফলে দলের নিয়ম মানতে তারা বাধ্য নয়। 

পিটিআইয়ের এসব স্বতন্ত্রদের মধ্যে এমন প্রার্থীও আছেন যারা তাদের নিজ দলের পছন্দের প্রার্থীর জন্য মনোনয়ন না পেয়ে ইমরানের দলের টিকেট নিয়েছেন।

নিজের ‘বিজয়ী’ ভাষণে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ইতোমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, ‘দেশকে সংকট থেকে উদ্ধার করার জন্য’ তিনি স্বতন্ত্রদের সঙ্গে হাত মেলাতে প্রস্তুত। 

পিটিআইয়ের বিস্ময়কর ফলাফলের পরও চতুর্থবারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চাওয়া নওয়াজের এই ইঙ্গিত ইমরানের দলের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়ালও পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চান। সদ্য নির্বাচিত অনেক স্বতন্ত্র সদস্য তার দলে যোগ দেবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

এই দুই দল সরকার গঠনের চেষ্টায় স্বতন্ত্রদের সরকারের অংশ করে নিতে চাইলে পরিস্থিত কী দাঁড়াবে তা সামনের দিনগুলোতেই পরিষ্কার হয়ে উঠবে। তাই আগামী কিছুদিন পাকিস্তানে তুমুল রাজনৈতিক তৎপরতা দেখা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।