মোট ঋণের ৯% খেলাপি
গেল বছরের শেষ মাস ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতে মোট ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা, যার মধ্যে এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা বা ৯ শতাংশই খেলাপি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক এ তথ্য জানান।
২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ, এক বছরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ২০ দশমিক ৭০ শতাংশ।
খেলাপি ঋণের এ চিত্র পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট বাড়লেও ২০২৩ সালের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বরে) অবশ্য ৯ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা কমেছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপীর পরিমাণ ছিল এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা, খেলাপির হার ছিল ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
গত বছরের শেষ প্রান্তিকে খেলাপির পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণ ছিল ঋণ পুনঃতফসিল সুবিধা দেওয়া।
২০১৯ সালের মার্চে প্রথমবারের মত খেলাপি ঋণ লাখের ঘর পেরিয়ে এক লাখ ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা হয়।
২০২০ সালের এপ্রিলে ব্যাংক ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে বেঁধে দেওয়ার সময়ে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আর এক টাকাও খেলাপি ঋণ বাড়বে না। এ বিষয়ে ব্যাংক মালিকরা তাকে কথা দিয়েছেন। বরং যে পরিমাণ ঋণ খেলাপি রয়েছে, তা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা হবে।
ঋণ সুদহার ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ৯ শতাংশে থাকলেও খেলাপি ঋণের বৃদ্ধি থেমে থাকেনি। ২০২৩ সালের জুন শেষে খেলাপির ঋণের পরিমাণ দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকায় পৌঁছায়; খেলাপির হার ছিল ১০ দশমিক ১১ শতাংশ।
তবে অর্থনীতিবিদদের মতে, ঋণ অবলোপন, পুনঃতফসিল, উচ্চ আদালতে মামলার কারণে খেলাপি না দেখানো ও ঋণ পুনর্গঠন মিলিয়ে দেশের ব্যাংকিং খাতের প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ আড়াই লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত খেলাপি ঋণের তথ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বরাবরই আপত্তি জানিয়ে আসছে।
২০১৯ সালের জুনে আইএমএফ এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রকৃত খেলাপি ঋণের অনেক তথ্যই আড়াল করে রাখা হচ্ছে। প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা হবে।