গত বছর ২ হাজার কোটি টাকার চোরাচালান পণ্য আটক: আনিসুল হক
সাংবাদিক সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ডের তদন্তের জন্য অনেক গভীরে যেতে হচ্ছে, তাই চার্জশীট দিতে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে তিনি আরও জানিয়েছেন, গত এক বছরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার অবৈধ চোরাচালান পণ্য ও বিভিন্ন মাদকদ্রব্য আটক করেছে।
জাতীয় পার্টিটর সংসদ সদস্য মো. হাফিজ উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিক সাগর-রুনী হত্যার তদন্ত কবে শেষ হবে সে সময় বেঁধে দিতে পারি না। কোন কোন মামলার তদন্ত করতে সময় লাগে। তদন্তকারী সংস্থা ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে না পারলে সময় নিবে। তদন্তকারী সংস্থা সাগর-রুনীর হত্যাকাণ্ডের কারণ সঠিক ভাবে উৎঘটন করতে সময় নিচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের লিখিত উত্তরে মন্ত্রী জানান, সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাচালান প্রতিরোধে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও দিক নির্দেশনার প্রেক্ষিতে বিজিবির সার্বক্ষণিক টহল কার্যক্রম পরিচালনা, ব্যাপক তল্লাশী এবং নজরদারি বৃদ্ধির ফলে প্রায়শই বিজিবিসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বিপুল পরিমাণ চোরাচালানী পণ্য ও মাদকদ্রব্য আটক করা হচ্ছে। গত বছর জানুয়ারি হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত এক হাজার ৯৯৬ কোটি ৯৯ লক্ষ ৭২৯ টাকার অন্যান্য অবৈধ চোরাচালানী পণ্য ও বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য আটক হয়েছে। ওই সকল ঘটনায় দুই হাজার ৮১৭ জন আসামীর বিরুদ্ধে ৩৮ হাজার ৬৯২টি মামলা করা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, ২০২৩ সালের জানুয়ারি হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত জব্দকৃত উল্লেখযোগ্য চোরাচালান পণ্যের মধ্যে রয়েছে, ইয়াবা, ফেন্সিডিল, মদ, বিয়ার, গাঁজা, হেরোইন, কোকেন, আফিম, ক্রিস্টাল মেথ আইস, এলএসডি, ইস্কাফ সিরাপ, বিভিন্ন নেশা জাতীয় ট্যাবলেট ও ইনজেকশনের মতো মাদকদ্রব্য রয়েছে। আর অন্যান্য চোরাচালানী পণ্যের বিভিন্ন প্রকার অস্ত্র ও গোলাবারুদ, স্বর্ণ, রৌপ্য, বিভিন্ন প্রকার বৈদেশিক মুদ্রা, গবাদিপশু, কাঠ, কষ্টি পাথর, বিভিন্ন প্রকার তৈরী পোশাক ও কাপড়, চা-পাতা, বিভিন্ন প্রকার ফল, নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোজ্যপণ্য, যানবাহন, ইমিটেশন, প্রসাধনী সামগ্রী, আতশবাজী ইত্যাদি রয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহে ৭৩টি বিশেষায়িত অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার ইউনিট মোতায়েনের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী আনিসুল হক।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে তিনি জানান, আধুনিক অগ্নিনির্বাপক গাড়ি পাম্প ও উদ্ধার সরঞ্জামাদি সংগ্রহের মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার সারাদেশে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনসমূহকে আধুনিক সরঞ্জামে সুসজ্জিত করার উদ্যোগ নিয়েছে।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, এরই ধারাবাহিকতায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনসমূহে আধুনিক ও যুগোপযোগী গাড়ি পাম্প ও উদ্ধার সরঞ্জামাদি সংগ্রহের লক্ষ্যে ‘মর্ডানাইজেশন অ্যান্ড ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স’ এবং ‘ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের অধীনে ১৩টি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ৭৩টি বিশেষায়িত অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার ইউনিট মোতায়েন’ শীর্ষক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্প দুটি অনুমোদিত হলে দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হবে।
গত ১৫ বছরে বিভিন্ন মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ জরিমানার মাধ্যমে ৭৭৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা আদায় করেছে। সরকারি দলের সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের লিখিত উত্তরে ওই তথ্য জানান আনিসুল হক।
আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, পুলিশের বিভিন্ন স্থানে জরাজীর্ণ থানাগুলোকে আধুনিকীকরণ এবং প্রয়োজনীয় দাফতরিক ও আবাসিক সুবিধা সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ পুলিশের থানায় প্রশাসনিক কাম ব্যারাক ভবন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।