গাজীপুরে গ্যাসের আগুনে মৃত্যু বেড়ে ১০
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গ্যাসের আগুনে দগ্ধদের মধ্যে দুই শিশুসহ আরো চারজন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
পাঁচ দিন আগের ওই অগ্নি দুর্ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে এ নিয়ে ১০ জনের মৃত্যু হল। আরো ১৯ জন এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শঙ্কর শংকর পাল জানান, রোববার রাত থেকে সোমবার সকালের মধ্যে গোলাম রাব্বী (১১), সোলায়মান (৯), জহিরুল ইসলাম (৪০) ও মোতালেব (৪৮) মারা যান। তারা সবাই আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন।
রাব্বীর শরীরে পোড়ার মাত্রা ছিল ৯০ শতাংশ, সোলায়মানের ৮০ শতাংশ। আর জহিরুলের ৫৮ শতাংশ এবং মোতালেবের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
জহিরুল ইসলাম সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানার আয়নাল ফকিরের ছেলে। মোতালেব টাঙ্গাইলের মধুপুর থানার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে। শিশু সোলায়মান ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার শফিকুল ইসলামের ছেলে। আর রাব্বী সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানার মো. শাহ আলমের ছেলে।
গত ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় ইফতারের আগে আগে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ওই ঘটনা ঘটে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক তেলিরচালা এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানান, যে বাসায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে গ্যাস বের হতে থাকা গরম সিলিন্ডার ভেজা চট দিয়ে মুড়িয়ে বাইরে রেখে যান পরিবারের কেউ একজন। স্থানীয়দের অনেকে কৌতূহলী হয়ে এগিয়ে এসেছিলেন কী হচ্ছে সেটা দেখতে। সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বেরিয়ে যে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে, তা বুঝতে পারেনি কেউ।
সে সময় পাশের আরেকটি বাসায় চুলা ধরাতে গেলে পুরো রাস্তায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তাতেই দগ্ধ হয় সবাই।
ওই ঘটনার পর মারাত্মকভাবে দগ্ধ ৩২ জনকে রাতেই ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়।
তাদের মধ্যে শনিবার তৈয়বা নামে ৪ বছরের এক শিশু এবং মুনসুর আলী আকন্দ নামের ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সোলেমান মোল্লা নামে ৪৫ বছর বয়সী আরেকজন।
এরপর রোববার ভোরে আরিফুল ইসলাম নামের ৩৮ বছর বয়সী একজন এবং সকাল পৌনে ৭টায় ২৫ বছর বয়সী মহিদুল খানের মৃত্যু হয়। রোববার সন্ধ্যায় মারা যান মাহিদুলের স্ত্রী নার্গিস আক্তার (২২)।
চিকিৎসক পার্থ শঙ্কর শংকর পাল জানান, গাজীপুরের ঘটনায় দগ্ধ ১৯ জন এখন বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। তাদের কারো অবস্থাই ভালো নয়।