দাবি মানেনি কেন্দ্র সরকার
‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন ভারতের কৃষকরা
বাজারে চলমান অনিশ্চয়তার মুখোমুখি ভারতের কৃষকরা ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিশ্চিতকরণ (এমএসপি) সহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন কৃষকরা। দাবি আদায়ে এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ও অর্জুন মুন্ডার সঙ্গে চণ্ডীগড়ে কৃষকদের আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে।
এর পরপরই আজ মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দিল্লির পথে যাত্রা শুরু করবে পাঞ্জাব, হরিয়ানাসহ একাধিক রাজ্যের কৃষকরা। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারকে তাদের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানাতে এর আগেও ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন বিক্ষুব্ধ কৃষক নেতারা। খবর এনডিটিভি ও দ্য হিন্দুর।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি ফলফসূ না হওয়ায় স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে এ ‘দিল্লি চলো’ আন্দোলন শুরু করেছেস কৃষকরা।
সংযুক্ত কিষান মোর্চার (অরাজনৈতিক) নেতাদের দাবি, সরকার দাবি না মানায় তারা দিল্লি চলোর মতো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছেন।
সংযুক্ত কিষান মোর্চার (অরাজনৈতিক) জ্যেষ্ঠ নেতা কেভি বিজু দ্য হিন্দু বলেছেন, কেন্দ্র আমাদের দাবির ব্যাপারে আশ্বাস দিতে ব্যর্থ হয়েছে। মন্ত্রীরা আমাদের কৃষিপণ্যের সর্বনিম্ন মূল্য (এমএসপি) নিয়ে কোনো আশ্বাস দেননি। আলোচনা ভেস্তে গেছে। আমরা আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখব।’
কৃষকদের দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—ঋণ মওকুফ, সব কৃষিপণ্যের আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সঙ্গে সব মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ও অন্যান্য চুক্তি বাতিল, বিদ্যুৎ বোর্ডের বেসরকারীকরণ স্থগিত, কৃষিতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ ও করপোরেটাইজেশন নিষিদ্ধ করা এবং কৃষকদের জন্য পেনশন চালু করা। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এসব দাবির বিষয়ে কোনো আশ্বাস দেয়নি।
এনডিটিভি জানিয়েছে, কৃষকদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে ২০২০ সালের বিদ্যুৎ আইন বাতিল সহ লক্ষ্মীপুর খেরিতে নিহত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ এবং আন্দোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিগুলো রয়েছে।
এ বিষয়ে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার (অ-রাজনৈতিক) জগজিৎ ডাল্লেওয়ালা এবং কিষাণ মজদুর সংগ্রাম কমিটির সারওয়ান সিং পান্ডেরের মতো কৃষক নেতারা বিস্তৃত দাবি পূরণে সরকারের প্রতিশ্রুতি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। সরকার এমএসপি, ঋণ মওকুফ এবং স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করলেও তাতে আশ্বস্ত নন তারা।
এরই মধ্যেই কৃষকদের অন্দোলন ঠেকাতে কঠোর নীতি গ্রহণ করেছে প্রশাসন। ভারতের বিভিন্ন জেলায় বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা। ইন্টারনেট, একসঙ্গে অনেক মেসেজ পাঠানো বা বাল্ক এসএমএস, সমস্ত ডঙ্গল সার্ভিস বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
আম্বালা, কুরুক্ষেত্র, কৈথাল, জিন্দ, হিসর, ফতেহাবাদ, সিরসা-সহ বেশ কিছু জেলায় এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। এছাড়া অম্বালাসহ একাধিক জায়গায় ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। সীমান্তগুলোতে নিরাপত্তা আঁটসাঁট করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।