গ্রেপ্তার ৩৭

ঢাকার রেস্তোরাঁয় ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ

টিবিটি ডেস্ক
টিবিটি রিপোর্ট
প্রকাশিত: ৩ মার্চ ২০২৪ ১১:৫৭ পিএম

বেইলি রোডের বহুতল ভবনে আগুনে প্রাণহানির ঘটনায় রাজধানীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রেস্তোরাঁগুলোর অনিরাপদ পরিবেশের বিষয়ে সামনে এলে অভিযানে নেমে পুলিশ ৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। একই সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অনিয়ম দেখতে পাওয়া খাবারের দোকানগুলো।

রোববার সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ধানমন্ডি, মিরপুর, গুলশান ও উত্তরা এলাকায় প্রায় অর্ধশত রেস্তোরাঁয় এ অভিযান চালায়।

অভিযানকালে ধানমন্ডি, মিরপুর, গুলশান এবং উত্তরা পূর্ব ও পশ্চিম থানা এলাকার খাবারের দোকানগুলো থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়; যাদের বেশির ভাগই রেস্তোরাঁর কর্মচারী বলে থানাগুলোর পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

তবে গুলশান থানাধীন রেস্তোরাঁগুলোতে অভিযানকালে অনিয়ম না থাকায় কেউ গ্রেপ্তার হননি বলে জানিয়েছেন এ থানার ওসি মাযহারুল ইসলাম।

অভিযানের বিষয়ে থানাগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, রেস্তোরাঁগুলোতে অবৈধ এবং ঝুঁকিপূর্ণভাবে সিলিন্ডার রাখাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তাদের গ্রেপ্তার করার পাশপাশি তাৎক্ষণিকভাবে সেসব রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে বেইলে রোডের আটতলা গ্রিন কোজি কটেজে ভয়াবহ আগুনে প্রাণ গেছে ৪৬ জনের, যাদের বেশির ভাগই ওই ভবনে থাকা বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত এক ডজন মানুষ। 

এ ঘটনায় দায়ের করা পুলিশের মামলায় বলা হয়েছে, ওই ভবনের বিভিন্ন তলায় ছিল ১৪টি খাবারের দোকান ও রেস্তোরাঁ।

ওই অগ্নিকাণ্ডের পর ফায়ার সার্ভিস বলেছে, ভবনটিতে অগ্নি নির্গমন পথ ছিল না। ভবনের সিঁড়িতে গ্যাস সিলিন্ডারসহ নানা ধরনের মালামাল রাখা ছিল। ফলে নিচতলায় যখন আগুন লাগে তখন ওই সিঁড়ি ব্যবহার করে নামতে পারেনি মানুষ। উপরে আটকা পড়ে ধোঁয়ার বিষক্রিয়ায় অধিকাংশের মৃত্যু হয়। 

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের ভাষ্য, এরকম দমবন্ধ পরিবেশই মানুষের মৃত্যু তরান্বিত করেছে। মৃতদের বেশিরভাগই বিষাক্ত ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মারা যান।

ভয়াবহ এ মৃত্যুর ঘটনার পর সামনে আসে রাজধানীর অন্যান্য অংশে থাকা বহুতল ভবনে রেস্তোরাঁগুলোর অনিরাপদ চিত্রও। দেখা যায়, গ্রিন কোজি কটেজের মতো অন্য ভবনগুলোর পরিবেশও ঝুঁকিপূর্ণ। 

রোববার সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ধানমন্ডি এলাকায় পুলিশ অন্তত ২২টি রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করে বলে জানান ধানমন্ডি থানার ওসি পারভেজ ইসলাম।

একইভাবে মিরপুর থানা এলাকায় ছয়টি রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানান ওসি মুন্সি সাব্বির আহমেদ।

গুলশান থানার ওসি মাযহারুল বলেন, তারা সন্ধ্যার বিভিন্ন খাবার দোকান, রেস্তোরাঁয় অভিযান চালান। তবে বড় ধরনের অনিয়ম পায়নি।

“আমরা সবাইকে সর্তক করে দিয়েছি। তারা যেন গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সর্তক হয় এবং নিয়ম মেনে চলে।” অন্য এলাকার মত উত্তরায় একইসঙ্গে বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় অভিযান চালায় সেখানকার পুলিশ।

উত্তরা পূর্ব থানার ওসি মজিবুর রহমান জানান, তারা বিাভন্ন খাবার দোকান থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছেন।

উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকা থেকেও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অধিকাংশ হোটেল ও রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান এ থানার ওসি আবুল হাসান।