ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ফেল: সমস্যা ঠিক কোন জায়গায়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট বের হয়েছে। প্রায় ৮৯% ফেল। এই নিয়ে সোসাল মিডিয়ায় উষ্মা প্রকাশ করে নানান মানুষ বেশুমার জ্ঞান ঝেড়ে দিচ্ছে। পত্রিকার প্রিন্ট ভার্সনের চেয়ে অনলাইনে বেশি। তার চেয়ে এগিয়ে ফেসবুক। অবশ্যই টেলিভিশন ইতিমধ্যেই তরমুজের মতো মার খেয়ে চলছে। এই যাদের টেলিভিশন নষ্ট হয়েছে বা নতুন সংসার শুরু করতে যাচ্ছে তাদের সবারই ফেসবুক আছে। তাই টেলিভিশন কেনা বা দেখার তেমন তাড়া নেই। সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ আপনাকে ফেসবুক দিচ্ছে। এই লেখা যিনি এখন পড়ছেন আপনি কিন্তু সোমালিয়ার জলদস্যুদের খবর টেলিভিশনের আগে ফেসবুক থেকে জেনেছেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফেলের খবর নিয়ে জ্ঞানীদের যত জ্ঞান ঝাড়াঝাড়ি সবই এখানে।
যাইহোক আসল “কামে” আসি।
কেন এতো ফেল!
কোথায় সমস্যা?
যে শিক্ষার্থীরা ফেল করলো এখানে তাদের অযোগ্যতা কতটুকু!
যারা ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে তারা একটা কারিকুলামে নির্ধারিত সিলেবাসে এস এসপি, এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে ভালো ফলাফলের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছে। নির্ধারিত সিলেবাস এবং কারিকুলামে ভালো রেজাল্ট করে তাঁরা প্রমান করেছে তারা মেধাবী। তবুও ফেলের তকমা লেগেছে তাদের ফকফকা চাঁদের মতো কপালে।
এর জন্য তাঁরা কী দায়ী?
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা যিনি বা যারা নিয়ন্ত্রণ করেন তাঁরা ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করার সময়ে এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষার পদ্ধতি, এটি কি তারা বিবেচনায় নিয়ে প্রশ্ন করেন? শিক্ষার্থীরা যে প্রক্রিয়ায় এইচএসসি এসএসসি পাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় সেই পদ্ধতি প্রক্রিয়া কি তাঁরা পেয়েছে?
নিঃসন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা একটি ব্যাপক প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্র। এবং অবশ্যই বৃহৎ পরিশর। তারপরও যে পদ্ধতিতে তাঁরা দুটি সার্টিফিকেট অর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাটা সেভাবে হোক, এটা নিশ্চয়ই ছাত্ররা দাবি করতে পারে।
প্রাসাঙ্গিকভাবে আশঙ্কা হয় এই সময়ে যারা নবম শ্রেণি বা তার নিচের শ্রেণিতে অধ্যায়নরত তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রেও উত্তীর্ণ হওয়ার ঝুঁকি বা ফেলের তকমা লাগার আশঙ্কা থাকতে পারে। কারণ তাদের ভর্তি পরীক্ষা যারা নিবেন, তাঁরা বর্তমান কারিকুলাম থেকে পাশ করা না হওয়ায় প্রশ্নপত্র প্রণয়নের ক্ষেত্রে কেমন হয় সেটা অপেক্ষা করে দেখার বিষয়।
যে পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে, সেই পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা দিলে হয়তো ছাত্রদের ফেলের তকমার ভেতরে পরতে হতো না।
লেখক: শিক্ষক ও কথাসাহিত্যিক