বুয়েট ক্যাম্পাস: ছাত্র রাজনীতি, কে কাকে বাঁধা দিতে পারে
প্রগতিশীল মেধাবী ছাত্রদের প্রতিষ্ঠান বুয়েট। দেশ সেরা মেধাবীরা এখানে যোগ্যতা অর্জন করে দেশের খেদমতে ছড়িয়ে পড়ে এটাই ঐতিহ্য। কেতাব অধ্যায়নই একমাত্র যোগ্যতা এমন নয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই বের হবে রাষ্ট্র পরিচালনার দেশ সেরা বাহাদুররা। এখান থেকে বের হবে প্রেমের ইতিহাসে জায়গা করা কপোত কপোতীরা। অর্থাৎ মুক্ত পথের দিশা যেমন এখান থেকে আসবে তেমনি
অতিতে এই প্রিয় দেশ মাতৃকার মুক্তি যুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, ৬৯ এর গণ আন্দোলন এহেন নানা আন্দোলনে কারা বা কোন ছাত্র সংগঠন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়েছে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে। কি সেই ছাত্র সংগঠন?
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ সহ বিশ্ব ব্যাপী যে সমস্যাটি প্রকট আকারে রূপ নিয়েছে সেটি হলো জংলি জংগি তৎপরতা। বার বার প্রমানিত হয়েছে কোন মাদ্রাসার ছাত্র এই জংগি তৎপরতায় জড়িত না। প্রগতির লেবাসধারী অগ্রসর প্রতিষ্ঠানের কিছু পথ হারোনো শিক্ষার্থী যখন পথ হারাতে ছিল, মুক্তি যুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী যে ছাত্র সংগঠনটি দেশের জংগি তৎপরতা রুখে দিয়েছে, সেটি কোন ছাত্র সংগঠন?
এ সব প্রশ্নের উত্তর: বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। দেশের কোন অর্জনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ছিল না?
(হ্যা, কিছু ভুল, কিছু চরম অপরাধ, আবরার হত্যা এর সাথে যারা জড়িত তারা অপরাধী। এবং এ অপরাধ ব্যক্তি পর্যায়ের। যদিও তারা দলীয় পতাকা-তলে এমন দেখাতে চেষ্টা করেছে। এখানে হাইব্রিড বা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে দলে ভিড়ে অন্য দলের এজেন্ডা হিসেবে মুক্তি যুদ্ধের পক্ষের দলে কালিমা লেপন করে কিনা সেটা খতিয়ে দেখার বিষয়।)
‘সাধারণ ছাত্র সমাজ’ এদের আপত্তি ছাত্রলীগ নিয়ে। ছাত্রলীগ ক্যাম্পাস শিক্ষা শান্তি প্রগতির পতাকা ওড়ালে তাদের আপত্তি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে গাত্রদাহ!
কেন?
সাধারণ ছাত্র সমাজ যেহেতু ইউনাইটেড, তাহলে অবশ্যই কেউ নেতৃত্ব দিচ্ছে। যেহেতু কেউ নেতৃত্ব দিচ্ছে, তাহলে কেউ পেছনে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থাকতে পারে। কারা বা কে কে সেই কারিগর যাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গে গাত্রদাহ!
আপনি বলতে পারেন যে কোন ইস্যুকে মুক্তিযুদ্ধের ফাইলে ফেলে প্রসঙ্গটাকে রং মাখিয়ে আসল জায়গা থেকে দৃষ্টি সরানো বা ইত্যাদি ইত্যাদি।
প্রসঙ্গ আর প্রশ্ন থেকে উদ্দেশ্য বোঝা যায়। যদি প্রশ্ন হয়, ‘আপনি কি আগের মতো বউ পিটান?’
এই প্রশ্নের উত্তর আপনি ‘হা’ বা ‘না’ যেটাই দেন আপনি ধরা। যদি এই প্রশ্নের মুখে আপনি পরেন। আপনি যদি উত্তরে ‘না’ ও বলেন তাহলে প্রদর্শনকারী লিখে নিবে আগের মতো পিটান না, তবে পিটান। অর্থাৎ প্রশ্নের ধরনটাই উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আপনি যে ভাবেই রেসপন্স করেন, প্রশ্ন কর্তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে।
ছাত্রলীগের ক্যাম্পাসে প্রবেশ যদি ঠেকানো নাও যায় কেওয়াজতো লাগিয়ে দেয়া গেল। একটা হট্টগোল গন্ডগোল পাকলে, জল ঘোলা হলে ফসল ঘরে তোলার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
সরকারের গোয়েন্দা ডিপার্টমেন্ট, যথাযথ কর্তৃপক্ষ সতর্ক থাকলে পড়াশোনার নির্বিঘ্ন পরিবেশ বহাল থাকবে এই প্রত্যাশা।
খন্দকার আতিক: শিক্ষক, সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক