বাংলাদেশের সিরিজ বাঁচানোর মিশন আজ
তিন ম্যাচ সিরিজে টিকে থাকার লক্ষ্যে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ৩ রানে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেছে লঙ্কান দল। বুধবার জিতলেই সিরিজ নিজেদের করে নেবে সফরকারীরা।
অন্যদিকে, সিরিজে টিকে থাকতে হলে বাংলাদেশের জয়ের বিকল্প নেই। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ছয়টায়। গাজী টেলিভিশন, টি-স্পোর্টস ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে।
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ক্রিকেটের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে নিয়মিত সাফল্য পাচ্ছে বাংলদেশ। বিশ্বকাপের পর এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। মূলত মানসিকতার পরিবর্তন করেই এই সাফল্য। বিশ্বকাপের পর চারটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে।
যার তিনটিই জিতেছে তারা। ড্র করেছে একটি। প্রথম ম্যাচে বোলারদের শেষের বোলিং এবং ব্যাটারদের শুরুর ব্যাটিং ছন্দহীন না হলে প্রথম ম্যাচটা জয়েও রাঙাতে পারতো। শেষ ৪ ওভারে শরিফুল, মোস্তাফিজ ও তাসকিনরা ৬৪ রান দিয়েছেন। অন্যদিকে লিটন, সৌম্য, শান্তরা ভালো ব্যাটিং করতে পারেননি।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাওয়ার প্লেতে তিন উইকেট হারানোর পরও মাহমুদউল্লাহ ও জাকের আলী যে ইনটেন্ট নিয়ে ক্রিকেট খেলেছেন-সেটাই আসলে গত কিছুদিন ধরে খেলার চেষ্টা করছে লাল-সবুজ দল। আগের ম্যাচের মতো ধারাবাহিকতা রক্ষা করারর পাশাপাশি টপ অর্ডারে অন্তত একজন রান পেলেই এই ম্যাচে সমতা ফেরানোর দারুণ সম্ভবনা তৈরি হবে বাংলাদেশের।
লিটন দাসের টেকনিক নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই, তিনি কতটা ভালো ব্যাটার এর আগে বহুবার প্রমাণ দিয়েছেন। কিন্তু বড় রানের লক্ষ্যে যেভাবে শুরুর প্রয়োজন ছিল, সেই কাজটাই ঠিকমতো করতে পারেননি তিনি। সৌম্য সরকার বরাবরই অধারাবাহিক। অধিনায়ক শান্ত চেষ্টা করলেও শেষ অব্দি পারেননি দলে অবদান রাখতে। বুধবার সিরিজে ফিরতে তাই এসব ভুলত্রুটি শুধরে নেওয়া প্রয়োজন। আগের ম্যাচের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে বাংলাদেশ সিরিজ হার এড়াবে- এমনটাই প্রত্যাশা বাংলাদেশের।
সিলেটে প্রথম ম্যাচটিতে তুমুল লড়াই করেছিল দু’দল। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৩ রানে হারলেও মাহমুদউল্লাহ ও জাকের ভক্তদের মন জয় করে নিতে পেরেছেন। এবার দ্বিতীয় ম্যাচেও তাদের দিকে নজর থাকবে। অধিনায়ক শান্তততো বলেই দিয়েছেন আজও তাদের কাছ থেকে এমন পারফরম্যান্স চান, ‘জাকের আলী নেমেই দারুণ খেলেছে।
শুরুতে রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) ভাইয়ের ইনিংসটাই টোন সেট করে দিয়েছিল। আশা করছি তারা দু’জন পরের ম্যাচেও ভালো করবে।’
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ-জাকেরের কাছ থেকে এমন ইনিংস প্রত্যাশা করলেও ফিনিশারদের এমন ইনিংস প্রতিদিন খেলা সম্ভব হয় না। ফলে সুযোগ এবং সময় দুটোই দিতে হবে তাদের। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে ভালো করতে হলে টপ অর্ডারকেই মূল রোল প্লে করতে হবে।
সেটি করা না গেলে কোনওভাবে ম্যাচ জেতা সম্ভব হবে না। মাঝে মধ্যে লেট অর্ডার কিংবা ফিনিশারদের ক্যামিও কোন ইনিংস ম্যাচ জিততে ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু সেটি সব সময় নয়।
সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে নামার আগে অবশ্য বাংলাদেশ দলকে টিম ম্যানেজমেন্ট বিশ্রাম দিয়েছে। হোটেলেই জিম, সুইমিং করেছেন খেলোয়াড়রা। ২/১ একজন ব্যক্তিগত কাজে বাইরে বের হলেও বেশিরভাগ ক্রিকেটারই হোটেল বন্দি হয়ে দিন কাটিয়েছেন। পরিপূর্ণ বিশ্রামে আজ চাঙা হয়েই স্বাগতিক দল মাঠে নামবে এমনটাই আশা টিম ম্যানেজমেন্টের।
দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘ক্রিকেটাররা প্রথম ম্যাচে দারুণ লড়াই করেছে। দুর্ভাগ্য শেষ মুহূর্তে ম্যাচটা হাত ফসকে বের হয়ে গেছে। তাই মানসিক ও শারীরিকভাবে যেন ক্রিকেটাররা চাঙা হয়ে মাঠে নামতে পারে সেজন্যই তাদের বিশ্রাম দেওয়া।’
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে পরিবর্তনের সম্ভবনা ক্ষীণ। আগের ম্যাচের একাদশ নিয়েই মাঠে নামতে পারে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। তবে শেষ মুহূর্তে মোস্তাফিজের জায়গায় সুযোগ পেতে পারেন তানজিম হাসান সাকিব।
কম্বিনেশন ভাঙতে চাইবে না লঙ্কান দলও। ওপেনার কুশল মেন্ডিস এবং মিডল অর্ডার ব্যাটার সাদিরা সামারাবিক্রমার দুটি দুর্দান্ত ইনিংসের পর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক চারিথ আসালঙ্কার ক্যামিও ইনিংসেই প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কা বড় সংগ্রহ পেয়েছিল।
সেজন্য লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটারদের ক্রিজে আসার প্রয়োজনও পড়েনি। শিশির থাকার পরও শ্রীলঙ্কা দারুণ বোলিং করেছে। সব মিলে তাই একাদশে পরিবর্তন আনতে চাইবে না শ্রীলঙ্কা।
কিন্তু প্রথম ম্যাচে ডেথ ওভারে বোলিং করার সময় পেসার মাথিশা পাথিরানার ইনজুরি নিয়ে উদ্বেগ আছে লঙ্কান শিবিরে।